বাঙলা সাহিত্যের অমর গল্পকার বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর প্রায় সবকটি রচনাতেই বাঙালী ছেলের সুদূরের হাতছানির গল্প শুনিয়েছেন। এরকমই এক সুদূরের হাতছানি ও বাঙালী ছেলের বিজয় অভিযানের কাহিনি “হীরামানিক জ্বলে”। সমুদ্রপারী দিয়ে ভারতীয় উপনিবেশ চম্পারাজ্যে সুশীলের এই অভিযান “চাঁদের পাহাড়”-এর শঙ্করের আফ্রিকা অভিযানের থেকে কোনও অংশেই কম রোমহর্ষক ও রোমাঞ্চকর নয়।
এক ক্ষয়িষ্ণু বনেদী জমিদার পরিবারের ছেলে সুশীল। কিন্তু ক্ষয়প্রাপ্ত আভিজাত্যকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার কোনও অভিপ্রায় ছিল না সুশীলের। কোন এক সন্ধ্যায় সুশীলের পরিচয় হল জাহাজের খালাসী জামাতুল্লার সঙ্গে। তার মুখ থেকে সে শুনল, প্রাচীন হিন্দু সভ্যতার ধ্বংসস্তূপ বুকে নিয়ে পড়ে থাকা এক জনহীন দূরপ্রাচ্যের দ্বীপের রোমহর্ষক কাহিনি। তার সঙ্গে খোঁজ পেল নক্সাকাটা এক রহস্যজনক পাথরের।
সুদূর সমুদ্রপারে ভারতীয় উপনিবেশ চম্পারাজ্যের বিপুল রত্নভাণ্ডার ও হিন্দু সভ্যতার নিদর্শন স্বরূপ দেবদেবীদের মূর্তির আকর্ষণ টেনে বার করে সুশীল ও সনৎকে। তারপর বিপদসঙ্কুল সমুদ্র অভিযান, সুদূর দ্বীপে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় পূর্বপুরুষদের গৌরবগাথার পুনরুদ্ধার ও সবশেষে সুশীলের বিপুল রত্নভাণ্ডার নিয়ে দেশে ফেরার আগাগোড়া বিচিত্র রোমহর্ষক ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতায় ভরা এই বই যে কোন বয়সের বাঙালী পাঠকের অবশ্যপাঠ্য।