চাঁদের পাহাড়
বাঙালীর ছেলে শঙ্কর, পাকা খেলোয়াড়, নামজাদা বক্সার, ওস্তাদ সাঁতারু,-দেশান্তরের হাতছানি পেয়ে সে পাড়ি দিল সুদূর পূর্ব-আফ্রিকায়। ইউগাণ্ডা রেলওয়ের নতুন লাইন তৈরি হচ্ছিল- চাকরী পেয়ে গেল। নতুন দেশ, নতুন লোকেদের মাঝে প্রথম কয়েকদিন বেশ রোমাঞ্চের মধ্যে দিয়েই কাটল শঙ্করের। কিন্তু তখনও কি শঙ্কর জানত যে অদৃষ্ট তার ভাগ্যে আরো অনেক বেশি কিছু লিখেছেন? আফ্রিকার ভয়ানক রূপ দর্শনের তখনও অনেকটাই বাকি ছিল শঙ্করের।
ডিয়েগো আলভারেজ নামে দুর্ধর্ষ এক পর্তুগীজ ভাগ্যান্বেষীর সঙ্গে হঠাৎ সেখানে তার দেখা। শঙ্কর এই দুঃসাহসী ভাগ্যান্বেষীর সঙ্গ ধরে বেরিয়ে পড়ল মহাদুর্গম রিখটারস্ভেলড্ পর্বতে অজ্ঞাত এক হীরের খনির সন্ধানে। ডিঙ্গোনেক বা বুনিপ নামে অতিকায় এবং অতিক্রূর এক দানব-জন্তু সেই হীরের খনি আগলিয়ে থাকত।
পর্যটকেরা যার নাম দিয়েছেন চাঁদের পাহাড় সেই রিখটারস্ভেলড্ পর্বতে গিয়ে জীবনমৃত্যু নিয়ে শঙ্করকে যে রোমাঞ্চকর ছিনিমিনি খেলতে হল তার আশ্চর্য বিবরণ যে কোনো বয়সের কল্পনাকে উত্তেজিত করবে।
গল্পের পাশাপাশি হুবহু আফ্রিকান পরিবেশের যে-সব নিপুণ ছবি আঁকা হয়েছে তা বাংলা বইয়ের জগতে আদর্শ স্থানীয়। বাংলা সাহিত্যে ক্লাসিক হিসেবে পরিগণিত, তরুণদের জন্য লেখা বিভূতিভূষণের এ-বই নিশ্চিতভাবে আজও পাঠক কূলের সাহিত্য রসনাকে তৃপ্ত করবে।