"যূথবদ্ধতা মানুষের সভ্যতার প্রথম শর্ত। তারপর যত সভ্য হয়েছে মানুষ, ক্রমশ ভুলেছে তার প্রথম শর্তের কথা। 'আমাদের'কে ছাপিয়ে উঠে এসেছে 'আমি'। সম্পদকে ছাপিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সম্পত্তি।"
* * * * * * * * *
‘যৌথখামার’ উপন্যাসটি আসলে সমকালীন প্রেক্ষাপটে লেখা চিরন্তন জীবন যুদ্ধের কাহিনী। ইতিহাস নয়, কিন্তু ইতিহাস হয়ে যাওয়া কিছু ঘটনা, যা মানুষের গণ-অভ্যুত্থানের , সমষ্টিগত জয়যাত্রার মূর্তপ্রতীক... তারই ঘটনাবহুল আশ্রয়ে বেড়ে ওঠা মানব মনের দৃঢ়তার আয়না বিশেষ- যা অক্ষরে অক্ষরে অনুদিত করা হয়েছে। এই সময়ের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অবশ্যপাঠ্য উপন্যাস হল যৌথ খামার। এখানে চরিত্ররা আদর্শবান কিন্তু কেউই ঈশ্বর নয়, রক্ত মাংসে গড়া জৈব প্রবণতা যুক্ত মানুষ।
দুই বন্ধু শঙ্কর আর স্বদেশ স্বপ্ন দেখেছিল যৌথখামারের। সে অনেক দিনের কথা। কলকাতার কোনো এক প্রান্তে এক জলাশয় আর মাছ ধরা মানুষদের নিয়ে তাদের যৌথখামারের স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব এখন শুভঙ্কর আর তিতাস তুলে নিয়েছে। আমি থেকে আমাদের হয়ে ওঠার গল্পে এসেছে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম-এর গুলিচালনা, তাপসী মালিকের ধর্ষণ , ২০০৭-এর উত্তাল রাজপথ। যে মিছিলে হাঁটছেন কবীর সুমন, অপর্ণা সেনরা। যেখানে মানুষ স্থবিরতা ভেঙে আবার প্রতিবাদী। এসেছে চক্রান্ত, কায়েমি স্বার্থ পূরণ করতে ক্ষমতার আস্ফালন। আছে ভুল-বোঝাবুঝি, প্রেম এবং অপ্রেম। তারপরেও তিতাস ফেরে শুভঙ্করের কাছে যূথ সমাজের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যৌথসমাজ গড়তে।