পরমানু বোমার আবিষ্কার বিজ্ঞানের আশীর্বাদ না অভিশাপ এই প্রশ্নের জবাব দিতে গেলে অধিকাংশ মানুষই হয়তো একবারের বেশী ভাববেন না । মানবজাতির ইতিহাসে নারকীয় মৃত্যুর কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই পরমানু বোমা । কিন্তু সেই অধ্যায়টুকু যদি ভুলে যাওয়া যায় চেষ্টা করে তাহলে প্রতিরক্ষা এবং আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে এই আবিষ্কারের গুরূত্ব অপরিসীম । যে কোন দেশ চাইবে পরমানু শক্তিতে নিজেকে বলীয়ান করে তুলতে । সেই বোমার নতুন এক ফর্মূলা তৈরীর কাজে হাত দিলেন অনুশক্তিনগরের এক ভারতীয় বিজ্ঞানী রামানুজম এবং তাঁর সহকারী মুগ্ধা ভার্গব । তাঁদের উদ্দেশ্য মহান । নতুন ফর্মূলা অনুযায়ী অনেক কম খরচে পাওয়া পরমানু শক্তি কাজ করে বহুগুন বেশী । এই ক্ষমতা যে দেশের কাছে থাকবে সে দেশ নিজেকে অন্যদের থেকে বহুগুন বেশী নিরাপদ , সুরক্ষিত ও বিপন্মুক্ত বলে মনে করতে পারবে অনায়াসেই ।
কিন্তু যে কোন সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই সমান তালে পা ফেলে আসে ধ্ব্বংসের কালো হাতের ছায়া । তাই ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এই প্রচেষ্টার খবরও চাপা থাকলনা । তা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকেও করে তুলল আগ্রহী । সেই আগ্রহ মেটানোর জন্য এবং সেই ফর্মূলা হস্তগত করার জন্য যে কোনরকম অসাধু উপায় নিতেও পিছপা হল না কোন কোন দেশ । একাধিক ভিন্নমুখী আগ্রাসন নানা ভাবে ছিন্নভিন্ন করে দিতে চাইল সরকারী পরিকল্পনা । অবশ্য ভারত সরকারের কাছে যথাসময়ে এসে পৌঁছেই গেল এই ধ্বংসকামী দেশগুলোর মনোবৃত্তির খবর । তাই সরকারী ব্যবস্থায় অনুশক্তিনগর থেকে মুগ্ধা ভার্গবকে সরিয়ে দেওয়া হল উত্তর পূর্ব ভারতের প্রত্যন্ত প্রান্তরে , যেখানে বসে তিনি তাঁর গবেষনার কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন ।
সফল হল কি সরকারী প্রচেষ্টা ? মুগ্ধা কি পেরেছিলেন তার কাজ সম্পুর্ন করতে ? নতুন কোন পরমানু বোমার ফর্মূলা আবিষ্কার হল কি শেষ পর্যন্ত ? মিলিটারী ইন্টেলিজেন্সের অতীব সুশিক্ষিত কর্মক্ষম অফিসারেরা শেষ পর্যন্ত তাঁদের দায়িত্বভার পালন করতে পারলেন কি পারলেন না ?বৃহত্তর স্বার্থরক্ষার জন্য তাঁদের কোন কোন নিজস্ব স্বার্থ ত্যাগ করতে হয়েছে ?
এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে পড়তে হবে এই উত্তেজনায় ভরপুর উপন্যাস , “রাত্রি শেষে ।”
রাত্রি শেষে যেমন সকাল আসে তার ভোরের আলো নিয়ে তেমনি এক নতুন দিনের ইশারা নিয়ে এসেছে এই উপন্যাস , যার মধ্যে প্রেম , প্রকৃতি , সামাজিক ও সাংসারিক সমস্যা , জীবনের নানান ওঠাপড়া নিয়ে এক সুতোয় গেঁথেছে রাহুল তিরি পরম অরা রামধারীসিং পিন্ডারী ন্যাড়া অর্ক রূমনি , পুচাই আর মুগ্ধা ভার্গবদের , যারা এই মহান দেশের অংশ , যাদের জীবনযাত্রা তৈরী করেছে এই দেশের বিজ্ঞানের অগ্রগতির পথ এবং সেই পথের সঠিক রক্ষনাবেক্ষনের চিত্র ।
সেই চিত্রকে জানতে গেলে পড়তে হবে রাজশ্রী বসু অধিকারীর নতুন উপন্যাস
“রাত্রি শেষে “ ।
পরিশেষে একটা কথাই শুধু বলা যায় , এই উপন্যাস পাঠককে হাত ধরে নিয়ে যাবে সেই উপলধ্বির পথে , যেখানে চলতে চলতে , বইটির পৃষ্ঠায় চোখ রেখে , মন রেখে , চরিত্রগুলির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গিয়ে তিনিও অবশ্যই নতুন করে আবারও অনুভব করবেন , আমি ভারতবাসী , আমি আমার দেশকে ভালবাসি ।