লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর আত্ম জীবনী মূলক বই এটি।
উনিশশো একাশি সাল থেকে দু-হাজার পঁচিশ, সময়ের হিসাবে ৪৪/৪৫ বছর। আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয়-- এতগুলো বছর ধরে কাগজ কলমের সঙ্গে কসরত করে কি লিখেছি আমি! গল্প? উপন্যাস?
আমার জবাব হবে, ও সব কিছুই নয়, আমি জীবন লিখেছি। শুধুমাত্র একটা জীবন। তার এগিয়ে চলা। পিছিয়ে পড়া। হেরে যাওয়া, হারিয়ে দেওয়া, হারিয়ে যাওয়া। হারিয়ে গিয়ে খুঁজে পাওয়া। আঘাতে ঠোক্করে ক্ষত-বিক্ষত রক্তাক্ত হওয়া। আছাড় খেয়ে মাটিতে পতিত হয়ে আবার সেই মাটিকে অবলম্বন করে উঠে দাঁড়াবার প্রয়াস। আকাশকে ছুঁয়ে দেবার দুর্বার অভীপ্সা-ইত্যাদি। তাই এ কথা বলা খুব একটা অযৌক্তিক হবে না-- আমার প্রতিটা কথা কাহিনিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আমারই গোটা জীবন।
কেউ কেউ এটাকে রচনার একটা দুর্বল দিক বলে চিহ্নিত করতে পারেন। যেটা খুব একটা ভুল হবে না। আমি সেই দুর্বলতার নির্মম শিকার। শত চেষ্টায় কিছুতেই যা থেকে বিমুক্ত করতে পারিনি নিজেকে। আসলে নিজের জীবনটুকু ছাড়া আর তো বিশেষ কিছু ছিল না। এইটুকু ছাড়া আজও অন্য কিছু নেই আমার নাগালের সীমায়।
জীবনে যত কিছু পাঠ, যা কিছু আহরণ এবং সঞ্চয় সব পেয়েছি জীবনেরই কাছ থেকে। জীবনই আমার পুঁথি পুস্তক, আমার শিক্ষক-গুরু-মার্গ দর্শক। ও ছাড়া আর কেউ নেই, কিছু নেই। তাই যা দু-লাইন লিখেছি সব জীবন থেকে শেখা, জীবন থেকে জানা, জীবন থেকে পাওয়া, জীবন থেকে নেওয়া -- জীবনের কথা। সে জীবন-কথা কাহিনির মধ্যে খণ্ড খণ্ড হয়ে ছড়িয়ে যাওয়া একান্তই আমার জীবন। আমার দৃষ্টির জীবন। আমি লিখতে বসলেই কলমের ডগায় এসে পড়েছে শুধু আমারই বহুধা বিভাজিত জীবন গাথা। বঞ্চিত-বিড়ম্বিত জীবন গাথা।
নব নামের সেই যে রিকশাওয়ালা, লাথখোর নামের সেই যে ট্রাক খালাসি, জীবন নামের ক্রোধী-চণ্ডাল, গুড়জল নামের মদখোর, ভগবান নামের সেই চোর, শ্রীপদ নামের মুটে, আগন্তুক পরিচয়ের সেই যে ডাকাত, বাঙাল নামের লেখক-- সব আমি। এরা সবাই আমার খণ্ডিত সত্ত্বা।
পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অকাদেমি পুরস্কার
সুপ্রভা মজুমদার স্মারক পুরস্কার
২৪ ঘণ্টা অনন্য সম্মান
দ্য হিন্দু পুরস্কার (চেন্নাই)
গেটওয়ে লিট-ফেস্ট রাইটার অফ দ্য ইয়ার (মুম্বাই)
কলিঙ্গ সাহিত্য পুরস্কার (ওড়িষ্যা)
সূর্য দত্ত ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড (পুনে)
রুশো ফেলোশিপ (জার্মানি)-প্রাপ্ত