রতনতনু ঘাটীর দুটি উপন্যাসিকা---‘অকাল বসন্তের পাখি’ এবং ‘বাসনা জেগে আছে’ প্রকাশিত হয়েছিল একটি পত্রিকার পরপর দু’ বছরের পূজাবার্ষিকীতে। পাঠকের মন জয় করেছিল প্রকাশের সঙ্গে-সঙ্গে। এখন সেই দুটি কাহিনিকে ‘অকাল বসন্তের পাখি’ নামে ধরে রাখা হল এক খণ্ডে।
‘অকাল বসন্তের পাখি’ উপন্যাসিকার নিভা অলস দুপুরে-বিকেলে ঘর গুছোয়, গান শোনে। পরদিন মলয়ার মা এসে বলল, ‘তোমার ঘর তো নতুন হয়ে গেছে! দাদাবাবু এসে চিনতেই পারবে না!’ নিভা বলল, ‘তোমার দাদাবাবুর আসতে এখন ঢের দেরি!’ বিয়ের পর থেকে নিশীথ কানাডায়। বছর ঘুরতে চলল, অফিসের কাজে ইন্ডিয়ায় আসার সুযোগই পায়নি। দক্ষিণ আলবার্তা, বো নদীর পাড়, এম-কে নামের মেয়েটিকে সামনে রেখে সে এক জীবন নিশীথের। নিভার দিগন্তে তখন ইলেক্ট্রিশিয়ান পলাশের ভয় আর ভয়হীনতা জড়ানো দিন! তারপর...নিভার জীবনে নাগলিঙ্গম গাছের পাতার আড়াল থেকে সেই পাখিটা ডেকে উঠল। সে এক অকাল বসন্তের পাখি!
কনকগড়ের নন্দপুর বাজারে অনিন্দ্যকুমার শাসমলের মার্বেলের দোকান ‘মমতাজ মার্বেল’। এ বাড়ির মেজোভাই বিনুর স্ত্রী বিনতা চাকরির আশায় দিনরাত পার্টির কাজ করে বেড়ায়। এ বাড়ির কারও তা পছন্দ নয়। কলেজে পড়তে গিয়ে অরুণেশ আর বাসনার পরিচয়। অরুণেশ মানুষের উপকার করে বেড়ায়। বারবার ভাল চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। বাসনার ছেলে বকুল। স্নায়ুর জটিল অসুখ। বকুল চলে গেল শূন্যের দিকে।
বাসনার মেয়ে এল, বিন্দি। অরুণেশ তখনও উড়ন্ত পাখি। বিনতা অরুণেশকে বলল, ‘এই ঝড়-বৃষ্টিতে তুমি বাইকে করে আমাকে অটোরাস্তাটুকু এগিয়ে দেবে? তারপর আমি অটো ধরে চলে যেতাম?’
‘এখন কী করে যাই বলো? বাসনা যে এখনও জেগে আছে!’
অন্ধকারে পথ হাঁটতে হাঁটতে বিনতা হোঁচট খেল দু’বার। তারপরই ভাবল, বাসনারা জেগে থাকে বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর!