অম্বুবাচি উপন্যাসের সমঊকাল বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিক। বর্ত্মানের মতো ‘নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি’ নয়, নিখাদ বাঙালিয়ানা বুকে নিয়ে যৌথ দালানেই ছিল পারিবারিক বিন্যাস। তৎকালীন বাঙালি যৌথ পরিবারগুলির মধ্যে প্রচলিত রীতিনীতি, বাল্যবিবাহের ভালোমন্দ, তৎকালীন সময়ের সামাজিক-রাজনৈতিক চেতনা নিয়েই এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট।
২০১৯ কলকাতা বইমেলায় প্রকাশ পায় অম্বুবাচি-পর্ব ১; পারিবারিক প্রথা মেনে দুই পরিবারের সম্মতিতে খুব কম বয়সে বিয়ে হয় কুমুদ-বিম্ববতীর। স্বভাবে একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরীত কুমুদ বিম্ব, নিজেদের মধ্যে ঝগড়া খুনসুটি করতে করতে পূর্বরাগের বাহুডোরে আবদ্ধ হয়। পরে এক বিশেষ পারিবারিক কারণে তাদের বিচ্ছেদ হয় কিছু বছরের জন্য।
অম্বুবাচি-পর্ব ২ তে আবার তাঁদের দেখা। কুমুদ এখন ষোলো আর বিম্ববতী এগারো। একটু বড় হয়ে ওঠা কুমুদ, বিম্ববতীর কৈশোর-প্রেম বেড়ে ওঠে। দু’জনের জীবন সম্বন্ধে দু’ধরণের দৃষ্টিভঙ্গি। বিনোদ ও কামিনীর গোপন অভিসারের সাক্ষী হয় কুমুদ।
এছাড়া ব্রিটিশরাজের নির্লজ্জ অত্যাচার এবং সাধারণ মানুষের কষ্ট এই উপন্যাসের আরও একটি দিক। সুহাসিনী ও বিপ্লবী হতে-চাওয়া সূর্যশংকর, মেধাবী সুভাষ ও চিরদুঃখী প্রভার পালটে-যাওয়া জীবন, বিনোদ ও কামিনীর অভিসারের কাহিনির পাশাপাশি আদর্শবান মেধাবী ডাক্তার জ্যোতিপ্রকাশের জীবনের টানাপোড়েন, এই কাহিনির পাতায় পাতায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে। বিম্ববতী কি পারবে সংসারে নেমে আসা চরম দুঃখে হাল ধরতে? হাজার সমস্যা সত্ত্বেও প্রেম ফল্গুধারার মতো বয়ে চলে আপন খেয়ালে, আপন গন্তব্যে। ছোটো বড়ো সুখ ও কষ্টের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে সকলের জীবন।