আতঙ্কবাদীদের গুরুদের সদ্য কৈশোর পেরোনো তরলমতি তরুণদের মস্তিষ্ক এমন ভাবেই ধোলাই করে দেন, যে তখন তারা তাদের তথাকথিত গুরু বা নেতার নির্দেশ পালনই অবশ্য-কর্তব্য মনে করে। তাতে যদি তাদের প্রাণও যায়, তাদের স্বর্গপ্রাপ্তি বা বেহেস্ত প্রাপ্তি অবধারিত হয়ে উঠবে। এই রকম জনাদশেক উদ্ভ্রান্ত তরুণ জনৈক 'আকা' নামে পরিচিত এক ধর্মোন্মাদ ব্যক্তির প্ররোচনায় ঢুকে পড়েছিল আমাদের শহরে। পুলিশের তাড়ায় পালাতে পালাতে তারা একটি মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে পড়ে। তারপর সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সব ডাক্তার সেবিকা কর্মী এবং সর্বোপরি মানসিক রোগীদের প্রতিভূ করে রেখে তাদের মারাত্মক সব আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে শুরু করে রাষ্ট্রের কমান্ডোদের সঙ্গে বাঁচার লড়াই। আর এক অসাধারণ মানসিক-শক্তি-বিশিষ্ট এক চিকিৎসকের সঙ্গে আতঙ্কবাদীদের নেতার মানসিক সংগ্রামের। এই গ্রন্থ সেই অসম-সংগ্রামেরও এক রুদ্ধশ্বাস টান টান কাহিনী যা পাঠকের মনকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়।
মানুষ যেদিন থেকে একে অপরকে
ভালোবেসে গোষ্ঠীবদ্ধ সমাজ তৈরী করতে শিখেছে, সেই দিন থেকেই হয়তো তার মনে হিংসারও উদয় হয়েছে। অন্য গোষ্ঠীকে হনন করে নিজ গোষ্ঠীর প্রাধান্য বৃদ্ধি করার প্রবৃত্তি সেই আদি যুগ থেকেই শুরু। বিশ্ব ইতিহাসে সব যুদ্ধ সব হত্যালীলার পশ্চাৎপটে এই একই কারণ বর্তমান।
দুটি বিশ্বযুদ্ধ, কোরিয়া, ভিয়েতনাম প্রভৃতি খণ্ডযুদ্ধে নরহত্যালীলার পর যে দুশ্চিন্তা আমাদের মনকে সদা সন্ত্রস্ত করে রেখেছে, তা হল কোথায় কোন্ আতঙ্কবাদী কী উপায়ে নূতন হত্যালীলা শুরু করে দেয়।
আমেরিকা সিরিয়া বাংলাদেশ আফগানিস্তান পাকিস্তান ভারত —আজ কোথাও আমরা এই আতঙ্ক থেকে মুক্ত নেই।