গীতগোবিন্দম্-র কবি জীবনকে নিয়ে লেখা বাংলা সাহিত্যে প্রথম এই উপন্যাস 'ভক্ত কবি জয়দেব'। ইতিহাসকে আশ্রয় করে, দীর্ঘ গবেষণাধর্মী এই উপন্যাসে লেখক তুলে ধরেছেন অজয়তীরের কেন্দুলী, মন্দিরা আর কাঁকসার সেনাপাহাড়ি অঞ্চলের ইতিবৃত্ত। নিরন্তর শ্রমদানে এবং গভীর গবেষণায় এই উপন্যাসের ভিত্তি রচিত হয়েছে। কেন্দুলি যা আজও বিখ্যাত কবি জয়দেবের নামমাহাত্যে। মকর মেলার প্রাচীন এই নদীতীরের ইতিহাসটিও কবি জয়দেবকে ঘিরেই আবর্তিত।
এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র জয়দেব হলেও উপন্যাসটি আসলে রাঢ়বঙ্গের একটি সময়ের সমাজ-জীবনের দলিল। এই উপন্যাসে সে সময়ের বঙ্গদেশের রাজা লক্ষণ সেন যেমন হাজির, তেমনই হাজির অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষজনরাও। উপন্যাসের শুরুতেই দেখা মেলে ঢেকারো কামারদের। কাহিনিতে মিশে গিয়েছে ইতিহাস, পুরাণ, লোককথা। ঐতিহাসিক পটভূমিতে নির্মিত যে কোনো উত্তম উপন্যাস প্রশ্রয় দেয় কল্পনাকেও। এই উপন্যাসেও রাধামাধবের কল্পনা প্রয়োজন মতো উড়াল নিয়েছে। হয়তো এক কবির জীবনালেখ্য বলেই উপন্যাসটির কিছু কিছু অংশ প্রায় কবিতার মতো। রাজা লক্ষ্ণণ সেন, কবিবন্ধু পরাশর, ভোজদেব আর পদ্মাবতীর জীবনও এসে মিশেছে কবি জয়দেবের জীবনকে ঘিরে। বর্গিদের রাজত্বের পাশাপাশি বাংলাদেশ, কাশী আর জগন্নাথ দেবের পুরীর কথা রয়েছে। সময়, কাল আর এক মহাজীবনের গল্প, ভক্তকবির এই জীবনকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে।