অদ্ভুত এক সময়ে আমরা বাস করছি। বিচিত্র ও দুর্ভেদ্য সময়ের মুখ। কুৎসিত রাজনীতি, ঘুণ ধরা প্রশাসন, সর্বব্যাপী দুর্নীতি, শিক্ষার নামে কুশিক্ষার বেসাতি, আদর্শহীন জীবন ও দুর্মদ আত্মস্বার্থের নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে আমরা নিত্য রক্তপাত করছি।
ক্ষতবিক্ষত হচ্ছি। অথচ কেউ কাউকে চিনি না। জানি না। কেউ কারও মুখ দেখি না। এক নৃশংস অপরাধকে সামনে রেখে এক উন্নত-হৃদয় যুবককে সঙ্গী করে এক অদম্য যুবতী বেরিয়ে পড়েছে আড়ালে-থাকা আততায়ী মুখগুলির সন্ধানে। এ যেন এক রোমাঞ্চকর দুঃসাহসিক অভিযান। পদে পদে ওত পেতে আছে ষড়যন্ত্র।
হিংসা আর বীভৎস আক্রমণের বিভীষিকা। কিন্তু এই মৃত্যুকণ্টকিত পথ ধরেই দুই যুবক-যুবতী ক্রমে ক্রমে পৌঁছে যায় প্রাপ্তির পরম তীর্থে। এ যেন অবিশ্বাস থেকে বিশ্বাসের তীর্থে উত্তরণের এক পবিত্র যাত্রা। পরিণতিতে অপেক্ষা করে থাকে এক অপূর্ব আবিষ্কার। এই ক্লেদপঙ্কিল রাজনৈতিক ভ্রষ্টাচার আর চরম স্বার্থমুগ্ধ অসুস্থ পরিবেশেও এখনও সৎ মানুষ আছে। প্রতিবাদ আছে। দাঁতে দাঁত চেপে মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য অক্লান্ত লড়াই আছে। অনুশোচনার মধ্য দিয়ে মানুষের নবজন্ম লাভ আছে। শোকতাপের অগ্নিভস্ম থেকে উঠে আসা আছে নবজীবনের বর্ণিল আলোয়। তীব্র সংবেদনশীল, অকুতোভয় এবং চিরকালীন সাহিত্যের দরবারে স্থান পাওয়ার যোগ্য এক বলিষ্ঠ সৃষ্টি 'বহিবালিকা'।