নদীর বাঁকে জঙ্গল ঘেরা লাল মাটির কোলে জেগে থাকা একটি ছোট্ট পরগণা। সেখানে মাটির ঘরে, পাতায় ছাওয়া কুটিরে কয়েক ঘর দেহাতী মানুষের বাস। দীঘির মিঠে জলের মতো শান্ত, নিস্তরঙ্গ। তবু সেই আপাত স্থবির কাকচক্ষুর তলে ছাই চাপা আগুনের মতো ধিক্ধিক্ করে জ্বলছে কার রক্তচক্ষু? যার সর্বগ্রাসী দৃষ্টিতে সাঁওতাল পল্লীর ওই প্রকৃতির খুব কাছে থাকা মানুষগুলোর উপর নেমে এলো এক অভিশাপের করাল ছায়া!
এক আশ্চর্য ক্ষমতা সম্পন্ন বন্দিনী রমণী, যার চোখের কাজল বারে বারে এঁকে দিয়ে যায় আগাম ত্রাসের ছবি। গাঁয়ের এককালীন গোষ্ঠীপ্রধান বা ‘জানগুরু’, প্রবীণ এই মানুষটি গাঁয়ের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী। আর গ্রামের দাম্ভিক জমিদার নিজের অজান্তেই এ কী ভুল করে বসল? যার মাশুল গুনতে হল গোটা গ্রামকেই।
বিজন বনানীর মাঝে ও কার বাস? তার লালাসক্ত দাঁতের ওপর ঝিলিক খেলে যায় তুষে ধরা লালসার লাল আগুনে। সে একা নিভৃতে আয়ত্ত করছে কোন গূঢ় বিদ্যা? কিসের আশায় আহ্বান জানাচ্ছে পাপ সলিলের অতল গভীর থেকে ওই কালরূপী দানবকে?
তার ডাকে সারা দিয়ে গ্রামের গগনে ঘনীভূত হয় সর্বনাশা কালো মেঘ। কেমন করে মুক্তি মিলবে এর থেকে? কিই বা উপায় যেখানে পাপের বিষাক্ত বাষ্পে ঝরে যায় অগুন্তি নিষ্পাপ প্রাণ? যখন প্রাণের আলো আড়াল করে ডানা মেলে ধরে আর থাবা গেঁড়ে বসে কালবিহঙ্গ...