আমরা প্রত্যেকেই ভুল করি, অপরাধ করি, শাস্তি পাই। তারপরে আমরা হয়তো সবাই ফিরে আসার সুযোগ পাই, কিন্তু বেশিরভাগ সময় আমরা আমাদের অতীতের দিকে ফিরে এতটাই আত্মমগ্ন থেকে যাই যে ভবিষ্যতের পথে পা বাড়াতে ভুলে যাই। তখন যদি সামনে এসে এমন বিপদ দাঁড়ায়, যার থেকে ফিরে যাওয়ার উপায় নেই, তখনই বোধ হয় আমরা আমাদের সেরা যুদ্ধটা লড়ি। সেই যুদ্ধ যতটা শারীরিক তার থেকে অনেক বেশি মানসিক ও আত্মিক।
যদিও এই উপন্যাসখানা একখানা থ্রিলার, তবুও এর পরতে পরতে রয়েছে জীবনের গল্প। যেখানে কিছু ভাঙাচোরা মানুষরা আবার করে বাঁচতে চায়, কিছু ভালো মানুষ সব জেনেও কিছু করে উঠতে পারে না, কিছু স্বার্থান্বেষী নিজেদের স্বার্থের জন্য সমাজের বৃহত্তর ক্ষতি করতেও পিছপা হন না, কিছু ধৃতরাষ্ট্র পিতা; সব মিলিয়েই এই উপন্যাস। পাঠকের এই উপন্যাস পড়তে পড়তে যদি একবারের জন্যও ‘ভালো’ মানুষগুলোর ওপরে রাগ উগরে আসে, আর ‘খারাপ’ মানুষগুলোর জন্য বুকের বাঁ-পাশটা চিনচিন করে ওঠে, তাহলে এই উপন্যাস লেখা সার্থক।
একটা মজার ব্যাপার হল, এই উপন্যাসের সবক-টি অধ্যায়ের ‘লাল’ বা তার সমার্থক কোনো শব্দে নামকরণ করা হয়েছে। কারণ? কারণ মুখ্য চরিত্র ‘লাল আদিল’-কে বোধ হয় এই উপন্যাসের সবটুকুতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছি।
পৃথিবীর যেখানে যত ভাঙাচোরা মানুষ আছে; তারা একদিন মাথা রাখার মতো কাঁধ খুঁজে পাক, তারা একদিন মুখ লুকিয়ে কাঁদার জন্য আরও একটা ভাঙাচোরা বুক খুঁজে পাক, তারা একদিন ভাঙা ডানার ভরসায় আবার করে ওড়ার স্বপ্ন দেখুক, তারা একদিন সবকিছুকে পেছনে ফেলে আবার করে বাঁচতে শিখুক।