এক শীতের সকালে ডিসিডিডি ডেকে পাঠালেন হোমিসাইড অফিসার অনুরাগ নন্দীকে। জানালেন, জোড়া খুনের একটা ঘটনা ঘটেছে। বিলেত ফেরত এক বিধবা মহিলা তাঁর একমাত্র তরুণী কন্যাকে নিয়ে বাস করতেন বেহালার বরিশা অঞ্চলে। কে বা কারা যেন বাড়িতে ঢুকে তাঁদের দুজনকেই খুন করে দিয়েছে। মেয়েটির ছিন্নভিন্ন পোশাক দেখে লোক্যাল পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, খুনি রেপ করতে আসে মেয়েটিকে কিন্তু বাঁধা পেয়ে খুন করে দেয় মা ও মেয়ে দুজনকেই। অনুরাগ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। মৃত মেয়েটির মোবাইলে একটি ছবি পাওয়া যায়। এই কেসের সঙ্গে সম্পর্কিত সকলকেই ভালো করে জেরা করেন। আর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে সেই সমস্ত অডিও রেকর্ডিং শোনান গোপাকে। গোপা রেকর্ডিংটা ভালো করে শুনে এবং অনুরাগকে আরও কিছু প্রশ্ন করে তৎক্ষণাৎ খুনিকে চিহ্নিত করে ফেলে। সূত্র নাকি কবিগুরু রবি ঠাকুর! কে, কেন, কখন এবং কীভাবে? ন্যারেটিভ বিহীন সম্পূর্ণ কথোপকথনের ভিত্তিতে লেখা ভিন্ন স্বাদের একটি ছোটগল্প ‘রবি ঠাকুরের সূত্রে’।
দ্বিতীয় গল্প ঃ হে অতীত কথা কও –
কালিপুজোর নেমন্তন্ন রক্ষা করতে অনুরাগ নন্দী সস্ত্রীক আসেন তাঁর পিসির বাড়ি, ডায়মন্ড হারবারে। সেখানে গিয়ে তাঁরা শুনতে পান পুরানো একটি বাড়ি ও সেই বাড়িতে বসবাসকারী পরিবারকে ঘিরে গড়ে ওঠা একটি কিংবদন্তীর কথা। শোনা যায়, এক গরীব মুসলমান মাঝির মৃত্যু মুহুর্তে দেওয়া অভিশাপে বারে বারে বিপর্যয় নেমে এসেছে ওই মিশ্র পরিবারে। আর বৃদ্ধ ব্রজেন্দ্র নিয়তির নিষ্ঠুর আঘাতে জর্জরিত হয়ে একা নিঃসঙ্গ অবস্থায় ভূতের মতো বাস করতে থাকেন মিশ্র ভবনে। লোকে বলে অতৃপ্ত আত্মা ভিড় করে আছে ও-বাড়িতে। সত্যিই কি তাই? নির্মম নিয়তি, অভিশাপ, অলৌকিক কোনও ক্রিয়াকলাপ। নাকি অতীতের এই প্রহেলিকার পিছনে অন্য কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ আছে? অনুসন্ধানে নামে গোপা। আর নগ্ন হয় পাপ-পঙ্কিল দুর্গন্ধময় অপ্রত্যাশিত কিছু ইতিহাস ….
তৃতীয় গল্প : মধুর প্রতিশোধ-
গোপার কাছে এক আষাঢ়স্য বিকেলে এসে উপস্থিত হয় মধুশ্রী নামে অসামান্য সুন্দরী এক যুবতী। সে কিছু অদ্ভুত প্রশ্ন করে গোপাকে এবং তার স্বামীর উপর নজর রাখার অনুরোধ জানায়।এরপর মধুশ্রীর স্বামী সন্দীপন বিষয়ীও অদ্ভুত ভাবে একই দিনে একই অনুরোধ নিয়ে গোপার কাছে আসে এবং নিজের খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানায়। আশ্চর্যজনক ভাবে পরের দিনই এজেসি বোস রোড ফ্লাইওভারে বাইক অ্যাক্সিডেন্টে সন্দীপন সত্যিই মারা যায়। তদন্তের অগ্রগতির সাথে সাথে একে একে জড়িয়ে পড়ে বাড়ির পরিচারক, সন্দীপনের সৎ মা শিখা দেবী এমনকি সন্দীপনের স্ত্রী মধুশ্রীও। সবারই মোটিভ থাকে খুনের। ওদিকে সন্দীপনের বাবা রণজয় বিশয়ীর মৃত্যু নিয়েও নতুন করে সন্দেহ তৈরি হয়। অনেক গোলক ধাঁধা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত আসল খুনীকে কি ধরতে পারবে গোপা ?
চতুর্থ গল্প : মায়াবি মারিচ-
একজন মহান দেশপ্রেমিকের মৃত্যু রহস্য আজও জানতে পারেনি দেশের মানুষ। উঠে এসেছে অনেক পরস্পর বিরোধী তত্ত্ব। কিন্তু হঠাৎ একদিন সরকারি মহাফেজখানা থেকে চুরি হয়ে গেল এরকমই সংবেদনশীল একটি টপ সিক্রেট ফাইল। সন্দেহের তির এক বিখ্যাত ঐতিহাসিক গবেষকের দিকে। জড়িত থাকার সম্ভাবনা এক কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনেরও। কিন্তু রাতারাতি ভ্যানিশ হয়ে গেলেন সেই ইতিহাসবিদ। প্রায় পাঁচ বছর অনুসন্ধানের পর আবার খোঁজ পাওয়া গেল সেই ঐতিহাসিকের। কিন্তু আবারও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোকে ফাঁকি দিয়ে পালাতে সক্ষম হলেন তিনি। এবার অভিযোগের আঙ্গুল স্বয়ং গোপার দিকে। এদিকে খোদ কলকাতায় নন্দী দম্পতির উপর হতে থাকল একের পর এক মার্ডার এটেম্প্ট। ঐতিহাসিকের সাথে গোপার কি সম্পর্ক? কারাই বা মারতে চাইছে নন্দী দম্পতিকে? গোপা কি পারবে এই রহস্যের কেন্দ্রে পৌঁছাতে? উদ্ধার হবে সেই গোপন ফাইল?