১৯৮০-এর মাঝামাঝি। দেশের নিরাপত্তার প্রয়োজনে ভারতের কোভার্ট অপারেশন টিম ‘জটায়ু’ গঠন করা হল। সেই পরিকল্পনার রূপকার ছিলেন মৃণাল রুদ্র। সারা ভারত খুঁজে খুঁজে তিনি এনেছিলেন এমনই নির্ভীক কিছু ছেলেমেয়েকে যারা নিজের দেশের জন্য সবকিছু দিয়ে দিতে পারে। পৃথ্বীশ, ক্যারোলিয়া, ভেঙ্কট, সিরাজ, বলজিৎ, সুরিন্দর, বিজেন্দার, অনীল ডিক্সিট, ক্যারোলিয়া সহ আরও কিছু অভিজ্ঞ নেভি অফিসারদের নিয়ে তৈরি হল এই টিম। কিন্তু প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই পাঞ্জাবের বুকে দানা-বাঁধা সন্ত্রাসের আবহকে নিয়ন্ত্রণ করতেই দেশে-বিদেশে নিয়োগ করা হল তাদের। জটায়ুর সতর্ক এজেন্টরা ছড়িয়ে পড়ল- পাঞ্জাবে, দিল্লিতে, লন্ডনে। বিদেশ থেকে ফান্ড পাঠানো প্রতিটি ‘থ্রেট’ আইডেন্টিফাই করে চলল ‘এলিমিনেশন’। এমনকি এই এজেন্টরা স্বর্ণমন্দিরের মধ্যে জঙ্গিদের ছদ্মবেশে ঢুকে পড়ল, অন্যদিকে ১৯৮২ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আমেরিকার সফরসঙ্গী অবধি হয়ে গেল তারা। তাদের লক্ষ স্রেফ একটাই- দেশের সুরক্ষা! এনিথিং ফর মাই নেশন, এভরিথিং ফর মাই কান্ট্রিমেন, নাথিং ফর মাইসেলফ।
এত চেষ্টার পরেও অপারেশন ব্লু-স্টার আটকাতে ব্যর্থ হল তারা। বিশ্বাসঘাতকের চক্রান্তে জীবন গেল এজেন্টদের। ২৯ শে অক্টোবর ১৯৮৪ দিল্লির ঘিঞ্জি এলাকার এক কামরার হোটেলে অজ্ঞাত আততায়ীর হাতে খুন হলেন টিম ‘জটায়ু’-এর জয়েন্ট-হেড মৃণাল রুদ্র। মারা যাওয়ার আগে লিখে যান, ‘Mission has been compromised. Shut down Jatayu’। আর ঠিক দুইদিন পরে দেশের প্রধানমন্ত্রীও খুন হন।দেশের নিরাপত্তা প্রশ্নে জটায়ু ভেঙে দেওয়া হল, সমস্ত এজেন্টদের ‘টার্মিনেট’ করে ফেলা হল।আর এই সবের মধ্যেই ফাঁক গলে পালিয়ে গেল ভিন্দ্রানওয়ালের এক ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। জটায়ু-ই কি নিজেদের অজান্তে জন্ম দিয়েছিল ‘দানব’-এর?
এখনও কান পাতলে ইন্টেলিজেন্স বিভাগের অন্দরে গুজব শোনা যায় ‘সে’ একদিন ফিরে আসবে, বুঝে নেবে তার স্বপ্নের ‘খলিস্তান’। চল্লিশ বছর পর সেই গুজব যেন ধীরে ধীরে সত্যি হতে শুরু করে। অপারেশন টাস্ক ফোর্সের প্রধান অনীল ডিক্সিটকে গ্রেফতারের চেষ্টায় তাঁরই নিজের টিম! অনীল ডিক্সিট পালিয়ে আশ্রয় নিলেন মৃণাল রুদ্রর নাতনি ইন্দ্রাণী রুদ্রর ফ্ল্যাটে। আবার বড় নাশকতা হতে চলেছে দেশে। হাতে মাত্র সাতদিন! রাজস্থানে সেনা ট্র্যাকে বিস্ফোরণ আর সীমান্তে শুরু গোলা বর্ষণ! একই দিনে স্বর্ণমন্দির দখল করে নেয় জনা বিশেক আতঙ্কবাদী। তারা কথা বলতে চায় কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে।এবার কি ‘সে’ বুঝে নেবে তাঁর স্বপ্নের খলিস্তান? অনীল ডিক্সিট আর ইন্দ্রাণী কি পারবে সব চক্রান্ত রুখে দিতে? নাকি এই চক্রান্তের নেপথ্যে আছে অনীল ডিক্সিট-ই?
সন্ত্রাস-বিধ্বস্ত পাঞ্জাব, দেশীয় রাজনীতি, ধর্মীয় সংঘাত, বিশ্বময় গুপ্তচর সংস্থার কর্মকান্ড আর স্বাধীন ভারতের এক কলঙ্কময় অধ্যায় নিয়ে আসছে সেমি-ফিকশন পলিটিক্যাল-স্পাই থ্রিলার, 'এজেন্টস অফ জটায়ু: দানবের উত্থান'। প্রখর রুদ্র সিরিজ থেকে অনেকগুলো চরিত্র এক নতুন রোমহর্ষক অ্যাকশন থ্রিলার নিয়ে উপস্থিত দুই মলাটে।